এই ক্ষনজন্মা মনীষী ১২৪৯ বঙ্গাব্দের ৮ ই চৈত্র বিক্রমপুরের ডোমসার নামক গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন । পিতার নাম শ্রী কাশী চঁন্দ্র সেন ও মাতা শ্রীমতি সারদা সুন্দরী । অতি শৈশবে পিতা মারা যাওয়ার কারনে কাঁচাদিয়া গ্রামে নিঃসন্তান মামা-মামীর অকৃক্রিম স্নেহ ভালোবাসা মায়া মমতায় মাকে সাথে নিয়ে তাদের কাছে প্রতিপালিত হন। বর্তমানে কাঁচাদিয়া গ্রামের অস্তিত্ব এখন আর নেই পদ্মায় পেটে চলে গেছে।
মামা রাধানাথ,ভাগ্নে গুরু প্রসাদকে মক্তবে পার্শী শিক্ষায় শিক্ষিত করে পরবর্তিতে ইংরেজী শিক্ষার জন্য ময়মনসিংহে ইংরেজী উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি করেন ।সেখানে তিনি কৃতিত্বের সাথে প্রবেশিকা পরিক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে উচ্চ শিক্ষা অর্জনের জন্য কলিকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি হন। পরবর্তিতে এই কলেজে কৃতিত্বের সাথে কুড়ি টাকার বৃত্তিসহ এফ এ পরিক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ,পর্যায়ক্রমে বিএ ও এম এ পাশ করেন কিন্তু তার এই কৃতিত্বে যে সবচেয়ে বেশী খুশি হতেন সেই (মামা) তখন আর জীবিত ছিলেন না ।গুরু প্রসাদ প্রথমে প্রেসিডেন্সি কলেজে অধ্যাপনা শুরু করেন। পাশাপাশি পড়াশুনা করে বিএল ডিগ্রি অর্জন করেন। তারপর অধ্যাপনা পরিত্যাগ করে কৃষ্ণ নগরে ডেপুটি মেজিস্ট্যাট নিযুক্ত হন। এর কিছু দিন পর তাকে শোক সাগরে ভাষিয়ে স্নেহময়ী মাতা ও মামী অল্পদিনের ব্যবধানে পৃথিবী ছেড়ে স্বর্গধামে প্রবেশ করেন। এরপর তিনি আইন পেশায় জড়িয়ে পড়েন।
একাধিক ইংরেজী বই এর লেখক গুরু প্রসাদ ঐসময়ে “Bahan Herald”পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন । এছাড়া “সোমপ্রকাশ”নামক প্রসিন্ধ পত্রিকায় অনেক প্রবন্ধ-নিবন্ধ লিখেছেন।১৮৯৭ইং সালে গুরু প্রসাদ সেন কলিকাতা থেকে বিক্রমপুর কামারখাড়া গ্রামে আসেন ।তিনি ১৮৯৮ইং সালের ২ ফেব্রুয়ারী মামা মামী উভয়ের স্মৃতি রক্ষার্থে High School প্রতিষ্ঠা করেন ।
পরবর্তিতে যা উচ্চ বিদ্যালয় নামান্তর করা হয় । শতাব্দীর এই বিদ্যাপীঠ ২৮ একর ভূমি নিয়ে যাত্রা করে । বর্তমানে একাধিক ভবন একটি বড় পুকুর ও একটি বিশাল খেলার মাঠ নিয়ে বিদ্যালয়টি সগৌরবে মাথা উচু করে দাড়িয়ে আছে । শতবছর পেরিয়ে গেলেও এই বিদ্যালয়ের যৌবন রুপ লাবণ্য দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে ।এই বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা । বিক্রমপুরের প্রাচীন বিদ্যালয়ের মধ্য উচ্চ বিদ্যালয় অন্যতম ।